নিউইয়র্ক সহ যুক্তরাষ্ট্রে সর্বোচ্চ ১০ বছর মেয়াদে বাংলাদেশ ই-পাসপোর্ট সেবা চালু
Published On Dec 17, 2021
মো: আলমগীর সরকার, বিজয় টেক:: নিউইয়র্ক সহ যুক্তরাষ্ট্রে গত বছর থেকে বাংলাদেশ ই-পাসপোর্ট সেবা চালু হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসরত বাংলাদেশিরা বর্তমানে নিউইয়র্কে বসেই ই-পাসপোর্ট পেতে পারেন। এই পাসপোর্ট ১০ বছর মেয়াদের জন্য নেওয়া যেতে পারে। আগের সব পাসপোর্ট পাঁচ বছর মেয়াদে হওয়ার কারণে পাঁচ বছর হওয়ার আগেই পাসপোর্ট নবায়ন করতে হতো। কিন্তু যারা ই-পাসপোর্ট নিতে চান, তারা চাইলে ৫ থেকে ১০ বছর মেয়াদের পাসপোর্টের আবেদন করতে পারবেন।
নিউইয়র্ক কনস্যুলেট সূত্র জানায়, অনলাইনে ই-পাসপোর্টের ফরম পূরণ করে ফি জমা দিতে হবে। অ্যাপয়েন্টমেন্ট নিয়ে কনস্যুলেটে যেতে হবে। সেখানে বায়োমেট্রিক প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে হবে। এরপর পাসপোর্ট নিতে হবে। ই-পাসপোর্টের জন্য অনলাইনে আবেদনের সময় প্রয়োজনীয় কাগজপত্র দিতে হবে।
কনস্যুলেট সূত্র জানায়, আবেদন করার জন্য নথিপত্র লাগবে : ১. আবেদনপত্রের সারাংশের প্রিন্ট কপি (অ্যাপয়েন্টমেন্টসহ), ২. শনাক্তকরণ নথির প্রিন্ট কপি (জাতীয় পরিচয়পত্র/ অনলাইন জন্ম নিবন্ধন সনদ), ৩. মানি অর্ডার/ব্যাংক সার্টিফায়েড চেক (ঈড়হংঁষধঃব মবহবৎধষ ড়ভ ইধহমষধফবংয, ঘবি ণড়ৎশ এর অনুকূলে), ৪. পূর্ববর্তী পাসপোর্ট এবং ডাটা পেজের প্রিন্ট কপি, ৫. সরকারি চাকরিজীবীদের ক্ষেত্রে এঙ/ঘঙঈ (যদি থাকে), ৬. তথ্য সংশোধনের ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র এবং ৭. আবেদনপত্রের প্রিন্ট কপি (ঐচ্ছিক)।
ই-পাসপোর্ট আবেদন পূরণের সাধারণ নির্দেশাবলি সম্পর্কে বলা হয়েছে : ১. ই-পাসপোর্টের আবেদনপত্র অনলাইনে পূরণ করা যাবে। ২. ই-পাসপোর্ট আবেদনের ক্ষেত্রে কোনো কাগজপত্র সত্যায়ন করার প্রয়োজন হবে না। ৩. ই-পাসপোর্ট ফরমে কোনো ছবি সংযোজন এবং তা সত্যায়নের প্রয়োজন হবে না। ৪. জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) অথবা অনলাইন জন্ম নিবন্ধন (বিআরসি) সনদ অনুযায়ী আবেদনপত্র পূরণ করতে হবে। ৫. অপ্রাপ্তবয়স্ক (১৮ বছরের কম) আবেদনকারী, যার জাতীয় পরিচয়পত্র নেই, তার পিতা অথবা মাতার জাতীয় পরিচয়পত্র নম্বর অবশ্যই উল্লেখ করতে হবে। ৬. জাতীয় পরিচয়পত্র অথবা অনলাইন জন্ম নিবন্ধন সনদ বয়স অনুসারে দাখিল করতে হবে। (ক) ১৮ বছরের নিচে হলে অনলাইন জন্ম নিবন্ধন সনদ। (খ) ১৮-২০ বছর হলে জাতীয় পরিচয়পত্র অথবা অনলাইন জন্ম নিবন্ধন সনদ, (গ) ২০ বছরের ঊর্ধ্বে হলে জাতীয় পরিচয় আবশ্যক। তবে বিদেশস্থ বাংলাদেশ মিশন হতে আবেদনের ক্ষেত্রে অনলাইন জন্ম নিবন্ধন (এনআইডি) সনদ গ্রহণযোগ্য হবে। ৭. তারকাচিহ্নিত ক্রমিক নম্বরগুলো অবশ্যই পূরণীয়। ৮. দত্তক/অভিভাবকত্ব গ্রহণের ক্ষেত্রে পাসপোর্টের আবেদনের সাথে সুরক্ষা সেবা বিভাগ, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় হতে জারিকৃত আদেশ দাখিল করতে হবে। ৯. আবেদন বর্তমান ঠিকানা সংশ্লিষ্ট বিভাগীয় পাসপোর্ট ও ভিসা অফিস/আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিস/বিদেশস্থ বাংলাদেশ মিশনে দাখিল করতে হবে। ১০. ১৮ বছরের নিচে এবং ৬৫ বছরের ঊর্ধ্বে সকল আবেদনে ই-পাসপোর্টের মেয়াদ হবে ৫ বছর এবং ৪৮ পৃষ্ঠার। ১১. প্রাসঙ্গিক টেকনিক্যাল সনদসমূহ (যেমন ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার, ড্রাইভার ইত্যাদি) আপলোড/সংযোজন করতে হবে। ১২. প্রযোজ্য ক্ষেত্রে প্রাসঙ্গিক জিও/এনওসি প্রত্যয়নপত্র/ অবসরোত্তর ছুটির আদেশ/পেনশন বই আপলোড/সংযোজন করতে হবে, যা ইস্যুকারী কর্তৃপক্ষের নিজ নিজ ওয়েবসাইটে আপলোড থাকতে হবে। ১৩. প্রযোজ্য ক্ষেত্রে বিবাহ সনদ/নিকাহনামা এবং বিবাহবিচ্ছেদের ক্ষেত্রে তালাকনামা দাখিল করতে হবে। ১৪. দেশের অভ্যন্তরে আবেদনের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য ফির ওপর নির্ধারিত হারে ভ্যাটসহ অন্যান্য চার্জ (যদি থাকে) অতিরিক্ত হিসেবে প্রদেয় হবে। বিদেশে আবেদনের ক্ষেত্রেও সরকার কর্তৃক নির্ধারিত ফি প্রদেয় হবে। ১৫. কূটনৈতিক পাসপোর্টের জন্য পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কনস্যুলার ও ওয়েলফেয়ার উইং অথবা ইমিগ্রেশন ও পাসপোর্ট অধিদপ্তরের প্রধান কার্যালয় বরাবর আবেদনপত্র দাখিল করতে হবে। ১৬, বৈদেশিক মিশন হতে নতুন পাসপোর্টের জন্য আবেদন করা হলে স্থায়ী ঠিকানার কলামে বাংলাদেশের যোগাযোগের ঠিকানা উল্লেখ করতে হবে। ১৭. অতি জরুরি পাসপোর্টের আবেদনের ক্ষেত্রে (নতুন ইস্যু) নিজ উদ্যোগে পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সনদ সংগ্রহপূর্বক আবশ্যিকভাবে আবেদনের সাথে দাখিল করতে হবে। ১৮. আবেদনের সময় মূল জাতীয় পরিচয়পত্র, অনলাইন জন্ম নিবন্ধন এবং প্রযোজ্য ক্ষেত্রে টেকনিক্যাল সনদ, সরকারি আদেশ/অনাপত্তি প্রদর্শন/দাখিল করতে হবে। ১৯. পাসপোর্ট রি-ইস্যুর ক্ষেত্রে মূল পাসপোর্ট প্রদর্শন করতে হবে। ২০. হারানো পাসপোর্টের ক্ষেত্রে মূল জিডির কপি প্রদর্শন/দাখিল করতে হবে। ২১. ছয় বছর বয়সের নিচের আবেদনের ক্ষেত্রে থ্রি আর সাইজের ছবি দাখিল করতে হবে। ২২. পাসপোর্ট হারিয়ে গেলে অথবা চুরি হলে দ্রুত নিকটস্থ থানায় জানাতে হবে। নতুন পাসপোর্টের ক্ষেত্রে পুরাতন পাসপোর্টের ফটোকপি, জিডি কপিসহ আবেদন দাখিল করতে হবে।
ই-পাসপোর্ট আবেদনের ক্ষেত্রে অনলাইনে যাবতীয় তথ্য উল্লেখ করে যথাযথভাবে ফরম পূরণ করার পর নির্ধারিত ফিসহ অ্যাপয়েন্টমেন্ট নিয়ে ফ্রিঙ্গারপ্রিন্টসহ প্রয়োজনীয় প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে হবে। সকল প্রক্রিয়া শেষে আবেদন ও ফিসহ প্রয়োজনীয় নথিপত্র গ্রহণ করার পর স্লিপ দেওয়া হবে। পাসপোর্ট রেডি হলে দেওয়া হবে ডেলিভারি।